Dr. অধ্যাপক ডা.সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
- এম.বি.বি.এস (ঢাকা), এম .ডি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়), এম.ফিল (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়)
- 0 Feedback
মনোরোগ ও যৌনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা
“Dr. অধ্যাপক ডা.সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব” Answers
মাস্টারবেশন বৈজ্ঞানিক ভাবে ক্ষতিকর নয় November 17, 2020
মনের খবর পড়ার জন্য শুরুতেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আরো কিছু বিষয় জানার ছিলো, যা এখানে উল্লেখ করা হয়নি। যেমন আপনি এসব সমস্যার জন্য আগে ডাক্তার দেখিয়েছেন কিনা? দেখালে তারা আপনাকে কি বলেছে? কোনো পরীক্ষা করিয়েছেন কিনা? আপনি লিখেছেন, আপনি মোটা হয়ে গেছেন। জানার দরকার ছিল, মোটা কি আগে থেকে ছিলেন নাকি মন খারাপ লাগার পর থেকে মোটা হওয়া শুরু হয়েছে? এসব বিষয়ে জানাটা দরকার ছিলো। আপনি সমস্যার কথা লিখতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আমার পড়াশোনায় মনোযোগ নাই। আমি সবসময় হতাশায় ভুগি। কারো সাথে মিশতে ইচ্ছে হয় না’। আবার লিখেছেন, ‘পড়ার টেবিলে বসলেও মনোযোগ দিতে পারি না। রাতে ঘুম হয় না’। এখানে উল্লেখ করা প্রত্যেকটি উপসর্গই বিষন্নতা বা ডিপ্রেশনের সাথে সংশ্লিষ্ট। অর্থাৎ বলা যায় আপনি বিষন্নতায় ভুগছেন। যখন কোনো সমস্যা সেই মানুষটির কাজে সমস্যা করে, তখন তার অবশ্যই চিকিৎসা নেওয়া উচিত। যা আপানর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সমস্যাগুলোর দুটো কারণ থাকতে পারে, যেমন মোটা হয়ে যাওয়া, ভালো না লাগা, মনোযোগ না থাকা এসব কিন্তু শারীরিক কোনো কোনো সমস্যার কারণেও হতে পারে। অর্থাৎ শারীরিক কারণেও মনের সমস্যা হয়, যা আপনার ক্ষেত্রেও হয়ে থাকতে পারে। এর প্রধান কারণ হতে পারে থাইরয়েড বা অন্য কোনো হরমোন। এছাড়া কোনো ওষুধ আগে থেকে খান কিনা সেটা জানাও প্রয়োজন ছিলো। আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি আপনি উল্লেখ করেছেন, সেটাকে বলেছেন যৌনসমস্যা হিসেবে। এটা আসলে যৌনসমস্যা নয় বরং এটি এক ধরনের যৌন আচরণ। মাস্টারবেশন এমনিতে অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক ভাবে ক্ষতিকর নয়। সেটা যতবার বা যতদিন ধরেই চলতে থাকুক। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, এ বিষয়ে চিন্তা করতে করতে বা এ নিয়ে অপরাধ বোধ কাজ করার জন্যও বিষন্নতা শুরু হতে পারে। সেই বিষন্নতা আপনার উপরের সব ধরনের সমস্যা করতে পারে। একই সাথে মোটা হওয়াতে সহায়তা করতে পারে। আমি আপনাকে বলবো অবশ্যই একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। শরীরের সমস্যা বা যৌনাচরণের সমস্যা বা অন্য যেকোনো সমস্যার কারণেই হোক না কেন আপনার বিষন্নতার কারণ জানা প্রয়োজন। তারপর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে। আবারো ধন্যবাদ মনের খবরের সাথে থাকার জন্য।
অনকে মানসিক রোগের কারণেই ইরেকটাইল ডিসফাংশন হতে পারে November 12, 2020
হুম, হতে পারে। পাশাপাশি শারীরিক বা মানসিক অন্য কোনো রোগ না থাকলেও অন্য কোন বিষয়ে মানসিক দ্বন্দ্ব আছে কিনা সেটা দেখেতে হবে। যৌন রোগ বা ইরেকটাইল ডিসফাংশন অনেক মানসিকে রোগ বা শারীরিক রোগের কারণে হয় বা ওষুধের কারণে সেটা ঠিক আছে। তবে সময় যে দৃশ্যমান কারণই থাকে এমন কোনো কথা নেই। দুজনের অনুভূতির দ্বন্দ্ব, অন্য কোনো বিষয়ে দুঃশ্চিন্তা বা মনোযোগের অভাব সহ অনেক কারণেই এমন হতে পারে। তবে আপনারে ক্ষেত্রে ওষুধের কারণে এটা হতেও পারে। আপনি এসব নিয়ে আপনার ডাক্তারের সাথে আলাপ করতে পারেন। আপাতত টেবলেট এনাফ্রেনিল বন্ধ করতে পারেন। আর একটা ছোট বিষয়- যৌন মিলনের আগে আগে এই ওষুধ না খেয়ে বরং যৌন মিলনের পরে ওষুধ খেতে পারেন। অনেক সময় ওষুধ খাওয়ার সাথে সাথে যৌন উত্তেজনা ব্যহত হয়। ধন্যবাদ।
আমি নেশা থেকে মুক্ত থাকতে চাই November 12, 2020
নেশা ছাড়ার আগ্রহ প্রকাশের জন্য প্রথমেই অনেক সাধুবাদ। নেশা করা বা নেশা থেকে মুক্ত থাকার বিষয়টি আসলে মানসিক দুর্বলতা বা সবলতার বিষয় নয়। এটি জানা-শুনা-বোঝা এবং কতগুলো নিয়ম কানুন মানা-না মানার বিষয়। সেই সাথে মনে রাখতে হবে, কেউ যখন নেশাতে আসক্ত হয়েই যায় তখন সেটা রোগ। একটি অসুখ। তখন সেটা শুধু মাত্র একটি অভ্যাস বা সাধারণ আচরনের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকেনা। বিষয়টিকে অসুখ হিসেবেই দেখতে হবে। মানসিক দুর্বলতা-সবলতার বিষয় নয়। তাহলে তো পৃথিবীতে মানসিক ভাবে সবল কোন মানুষই নেশায় জড়িয়ে পরতেন না। আপনি আবার নেশায় জড়িয়ে পড়ার কারনগুলো নিজে নিজে ব্যাখ্যা বা খেয়াল করে দেখুন। যা যা, যেভাবে আপনার করার কথা ছিলো আপনি সেসব ঠিক মতো পালন করেছেন কিনা? মনে রাখবেন, সব অসুখের জন্যই কমন কিছু বিষয় এবং নিয়ম আছে। যেমন; অসুস্থ হলে চিকিৎসা করাতে হয়। আবার অসুস্থ না হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় বা নিয়ম মনে রাখতে হয়, মানতে হয়। পুনরায় যাতে একই সমস্যায় আবার পড়তে না হয়, সেটাও মনে রাখতে হয়, তার জন্যও কিছু নিয়ম-কানুন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। আর নেশাকে বলা হয় দীর্ঘমেয়াদী রোগ। যার চিকিৎসা শুধুমাত্র হাসপাতালে থাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কোনো কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি বলে, নেশার চিকিৎসা কমপক্ষে তিন বছর চালিয়ে যাওয়া উচিত। এ ব্যাপারে আরেকটি বিষয়ও খুবই জরুরী সেটি হলো, পরিবারের সম্পৃক্ততা। নির্দিষ্ট সময়ে ফলো-আপ করা, নেশা জড়িয়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট কারন খেয়াল করা এবং সেসব থেকে দূরে থাকা, বিনোদনের গ্রহনযোগ্য পদ্ধতিগুলি বাছাই করা এবং সেই মতো সেসব উপেভোগ করা। হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে ভালো হয়ে গেছি মনে করেই কেউ আর প্রয়োজনীয় কাজটি করেন না, ফলো-আপটি করেননা। তাতেই সমস্যা বাধে। সুতরাং চিকিৎসার ভেতর আসা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ফলো-আপ করা ও বিষয়গুলো মনে রেখে যে অনুযায়ী চলা। আপনাকে অনুরোধ করবো আপনার জানা বিষয়গুলিকে নিয়মের মধ্যে আনতে এবং অবশ্যই কোনো একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁর উপদেশ বা পরামর্শ অনুযায়ী চলতে।